নববর্ষের ছুটির আবহে গোটা বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। কদিন আগেই নাসার এরিয়ন-৫ রকেটে চেপে মহাকাশে পাড়ি জমিয়েছে বিশ্বের ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী স্পেস টেলিস্কোপ ‘James Webb’। তারপর হঠাৎই গোটা বিশ্বকে আরও একবার চমকে দিল নাসার সাম্প্রতিক ঘোষণা। বেশ বড়ো অঙ্কের অর্থ খরচ করে এবার ধর্মযাজক (Priests) নিয়োগ করল নাসা (NASA)।

খবর টা পরে গাঁজাখুরি মনে হচ্ছে তাই তো ? শুনে গাঁজাখুরি গপ্পো মনে হওয়াই স্বাভাবিক। NASA  শেষে কিনা ধর্মের পথে ?  তবে খবরটি সত্যি।  ধর্মের পথেই হাঁটল বিজ্ঞান। সম্প্রতি, ভিনগ্রহী প্রাণীদের অনুসন্ধানের জন্য ধর্মতাত্ত্বিকদের শরণাপন্ন হল বিশ্বের অন্যতম বিজ্ঞান সংস্থা। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায় অন্য জায়গায়। এলিয়েন খুঁজতে কীভাবে সাহায্য করবেন ধর্মযাজকরা? আর নিখাদ বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের সম্পর্কই বা কী?

হ্যাঁ, এই প্রশ্নের উত্তর পেতেই NASA‘চাকরি’ দিচ্ছে ২৪ জন ধর্মযাজককে। ভিনগ্রহী প্রাণীদের অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হলে, মানুষের সার্বিক প্রতিক্রিয়া ঠিক কী হবে— তা বোঝার জন্যই নাসার এই উদ্যোগ। পাশাপাশি দেবতা ও সৃষ্টি সম্পর্কে ধর্মীয় মতামত এবং ধর্মগ্রন্থের গল্পকথায় ভিনগ্রহী প্রাণীদের অস্তিত্বের বিষয়ে বিশদ তথ্য পেতেই এমন পদক্ষেপ নাসার।

রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর থিওলজিক্যাল ইনকোয়ারি (সিটিআই) সংস্থার ২৪ জন ধর্মতাত্ত্বিককে নিয়োগ করছে নাসা। নিউ জার্সির এই সংস্থা মূলত শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী এবং ধর্মযাজকদের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করে থাকে। এক ছাতার তলায় আনার চেষ্টা করে বিজ্ঞান এবং পৌরাণিক তত্ত্বকে। তবে আজ নয়, ২০১৪ সাল থেকে ধর্মযাজক নিয়োগের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু করে নাসা। সে-বছরই কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রির স্নাতক তথা পাদ্রী ও ধর্মতত্ত্ববিদ ডঃ অ্যান্ড্রু ডেভিসনের সঙ্গে কথা বলে NASA । এবার নাসার পুরোহিত নিয়োগ করার প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধায়ক তিনিই। সব মিলিয়ে গোটা প্রকল্পের জয় ১১ লক্ষ মার্কিন ডলার গ্র্যান্টও বরাদ্দ করেছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থাটি।

মঙ্গল তো বটেই, এই মুহূর্তে বৃহস্পতি, শনি-সহ সৌরজগতের একাধিক গ্রহে ও তাদের উপগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব কিংবা ইতিহাসের সম্পর্কে জানতে মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে নাসা। সেইসঙ্গে অনুসন্ধান চলছে বর্হিবিশ্বেও। তাতে সাফল্যও মিলেছে বেশ। আকাশগঙ্গায় বহু বহু গ্রহ চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে যেখানে পৃথিবীর মতো প্রাণের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। তবে সেখানেই থেমে থাকতে চায় না নাসা। বরং, বিজ্ঞানের পাশাপাশি ধর্মের আঙ্গিকেও অনুসন্ধান চালাতে চায় ভিনগ্রহীদের। কথায় আছে, যেখানে বিজ্ঞানের শেষ সেখান থেকেই কল্পনার শুরু। তবে কি বিজ্ঞান ও ধর্ম এই দুই তথাকথিত বিপরীত ধর্মী  দুই জগৎকে এক সুতোয় কি বাঁধতে পারবে NASA র এই ধর্মচর্চা?

Tagged in:

,