পেট্রোল ,ডিজেলের অগ্নিমূল্য মানুষকে বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবতে বাধ্য করছে । গাড়ির ট্যাংক ভর্তি করতে গিয়ে মধ্যবিত্তের নাজেহাল অবস্থা ।সাথে পরিবেশ দূষণ বেড়েই চলেছে । এই দুটো জায়গাতেই ফোকাস করে নানান ভারতীয় স্টার্টআপ গত ২-৩ বছর করে নানা  ইলেকট্রিক যান বাহন বের করার চেষ্টা করে চলেছে। সেই চেষ্টারই নতুন একটি দিক দেখা গেলো  দিল্লী আইআইটির (ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি) বুকে গড়ে ওঠা স্টার্টআপ, Geliose Mobility সম্প্রতি লঞ্চ কপির একটি নতুন ইলেকট্রিক স্কুটারের মাধ্যমে । স্বল্প দূরত্বে  জিনিসপত্র ডেলিভারি ও ব্যক্তিগত যাতায়তের জন্য আদর্শ এই বৈদ্যুতিক স্কুটারের নাম ‘Hope’ (হোপ)।

শুনতে অবিশ্বাস্য  হলেও এই নতুন  Hope ইলেকট্রিক স্কুটারে  প্রতি কিলোমিটার যেতে খরচ হবে মাত্র ২০ পয়সা ! সাথে গ্রাহকদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে এটি পোর্টাবেল চার্জার দিয়ে বাড়ির যেকোনো সাধারণ ইলেকট্রিক সকেটে চার্জ দেওয়া যাবে। এটির আসলে মূল powerhouse  হলো একটি বড়ো  লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি । ব্যাটারি সম্পূর্ণ চার্জ হতে সময় নেবে প্রায় ৪ ঘন্টা (৩ ঘন্টা ১২ মিনিটে ৮০ শতাংশ চার্জ)৷ মজার কথা হলো এই ইলেকট্রিক স্কুটার ব্যাটারীর পরিমাপের বদলে দূরত্বের পরিমাপে পাওয়া যাবে।  Hope বৈদ্যুতিন স্কুটারটি ৫০ কিমি ও ৭৫ কিমি রেঞ্জের ব্যাটারি ক্যাপাসিটির অপশনে কেনা যাবে। আবার সর্বোচ্চ গতিবেগ ২৫ কিমি/ঘন্টা হওয়ায় ড্রাইভিং লাইসেন্স বা রেজিস্ট্রেশনের দরকার পড়বে না।

শুধু তাই নয় Geliose এর এই  Hope ইলেকট্রিক স্কুটার বিভিন্ন আধুনিক ফিচারে সজ্জ্বিত। ব্যাটারি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ডেটা মনিটরিং সিস্টেম, এবং কোম্পানির নিজস্ব ভেভলপ করা প্যাডেল অ্যাসিস্ট সিস্টেম এতে ইন্টিগ্রেট করা হয়েছে। সাথে আপনার স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে এই ইলেকট্রিক স্কোয়াটেরটি আবার ডেটা অ্যানালিটিক্স ও ফ্লিট ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ্লিকেশনগুলির জন্য অলরেডি IoT (Internet of Things) এনাবল্ড হয়ে এসেছে। বর্তমানে ভারতে যে সমস্ত  স্মার্ট ইলেক্টিক স্কুটার পাওয়া যায় , ফিচারের দিক দিয়ে Hope ইলেকট্রিক স্কুটার সেই তালিকার উপর দিকেই থাকবে ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এখন খুব কম সংস্থা স্কুটারে প্যাডেল অ্যাসিস্ট সিস্টেম অফার করে। Hope ই-স্কুটারে এই ফিচারটি থাকার ফলে সুবিধা অনুযায়ী সওয়ারি পেডাল ও থ্রোটলের মধ্যে সহজেই স্যুইচ করতে পারবেন। আবার পার্কিং অ্যাসিস্টান্সের জন্য এতে বিশেষ রিভার্স মোড পাওয়া যাবে। রাগড্ (Rugged) ব্যবহারের জন্য Hope খুব শক্তিশালী ও লাইটওয়েট ফ্রেমের ওপর নির্মিত। যাঁরা  Hero  র ইলেট্রিক সাইকেলের সাথে পরিচিত তারা এই  Hope ইলেকট্রিক স্কুটারে অনেক মিল খুঁজে পাবেন।  স্কুটারটিতে রেভোলিউশনারি স্লাইড ও রাইডস ফিচার আছে যা রাইডারদের প্রয়োজনীয়তার ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন লোড বহনকারী অ্যাক্সেসরিজ বা রিয়ার সিট সংযুক্ত করতে দেয়।

Geliose মূলত ডেলিভারি-ভিত্তিক ব্যাবসায় গাড়ি পরিবেশনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এই ইলেক্টিক স্কুটার টি বানিয়েছে । সংস্থাটি লজিস্টিক ও ডেলিভারি কোম্পানিগুলির সাথে হাত মিলিয়ে ফুডস, ই-কমার্স, গ্রোসারি, এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য স্থানীয় এলাকায় সরবরাহ করতে হোপ ই-স্কুটার নিযুক্ত করার চেষ্টা করছে।

এই মুহুর্তে, শুধুমাত্র ডেলিভারি সংক্রান্ত কাজের জন্য Hope বুকিং করা যাচ্ছে। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য এর বুকিং কয়েক মাস পর শুরু হবে। স্কুটারটি ৪৬,৯৯৯ টাকায় কেনা যাবে। যা একে বাজারে সবচেয়ে সস্তা ইন্টারনেট কানেক্টেড বৈদ্যুতিন স্কুটারে পরিণত করেছে৷ বর্তমানে  শুধু মাত্র দিল্লি-এনসিআর এলাকায় এটি উপলব্ধ। তবে কোম্পানির দাবি অনুযায়ীএই  বছরের শেষের দিকে এটি ভারতের আরো অন্যান্য শহরে ছড়িয়ে পড়বে ।

Tagged in: