করোনা মহামারীর কারণে ওয়ার্ক ফ্রম হোম কালচার এখন কর্মজগতের অঙ্গ হয়ে গেছে। শুধু আইটি কর্মীরাই নয় এখন সব ধরণের পেশাতেই ওয়ার্ক ফর্ম হোম ‘নিউ নরমাল’। কিন্তু তা বলে বলে বাড়িতে বসে মঙ্গল গ্রহে রোভার চালানো ! শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও এমন টাই করছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাসার বিজ্ঞানী ইম্পেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক সঞ্জীব গুপ্ত ! Perseverance রোভার কন্ট্রোলের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা সত্ত্বেও নাসার মূল গবেষণাকেন্দ্রে নয় ,দক্ষিণ লন্ডনে লুইশামে নিজের এক কামরার ছোট্ট অ্যাপার্টমেন্ট থেকেই বর্তমানে এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ৫৫ বছর বয়সী অধ্যাপক অধ্যাপক সঞ্জীব গুপ্ত।। যা ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’-এর এর একটা নতুন মাত্রা বলা যায় ।

কিন্তু দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় নাসায় জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরি ছেড়ে লন্ডনে নিজের ফ্ল্যাটে কেন ? আসলে জেপিএল ল্যাবেই অন্যান্য বিজ্ঞানীদের মতো কাজ করতেন তিনি। তাঁর বর্তমান ফ্ল্যাটের আয়তনের তুলনায় তিনগুণ বড়ো অফিসও ছিল সেখানে। তবে ব্যক্তিগত জরুরি দরকারে গতবছর লন্ডনের বাড়িতে ফিরেছিলেন সঞ্জীব গুপ্ত। তারপর কোভিড পরিস্থিতির জন্য আর ফেরা হয়নি ক্যালিফোর্নিয়ায়। তাই বাড়িতে থেকেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আর এই কাজে তাঁর সাথে জড়িয়ে আছে আরো এক ভারতীয় বিজ্ঞানীর নাম। বন্দনা ভার্মা।Perseverance মার্স রোভার এর কারণে ইতিমধ্যেই সকলের কাছেই বেশ পরিচিত হয়ে গেছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই বিজ্ঞানীর নাম। মঙ্গলগ্রহে নাসার পাঠানো পার্সিভারেন্স রোভারের নেভিগেশন দায়িত্বে রয়েছেন তিনিই । সঞ্জীবের সাথে জুটি বেঁধে এবং আরো অনেক নাসার বিজ্ঞানীদের সাথে মিলে Perseverance রোভারের চলাফেলা কন্ট্রোল করছেন তিনি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বর্তমানে মঙ্গলের জেজেরো ক্র্যাটারে (crator )অবস্থান করছে নাসার পার্সিভারেন্স রোভারটি। এটি শুধুমাত্র ছবি তুলতেই মঙ্গলে পাঠানো হয়েছে তাই নয় । ছবি তোলার সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলের এই প্রাচীন হ্রদের ভূপৃষ্ঠ থেকে বিভিন্ন নমুনার সংগ্রহ সে নিয়ে আসবে পৃথিবীতে। তারপর পরীক্ষা করা হবে, সেখানে অতীতে কোনো মাইক্রোবায়বাল প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা। উত্তর মিলতে পারে মঙ্গলের ভূতত্ত্ব এবং জলবায়ুর সম্পর্কেও। সঞ্জয় গুপ্ত পার্সিভারেন্সের এই কাজটারই তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। তাঁর কম্যান্ডেই এই মার্স রোভার মঙ্গলপৃষ্ঠ থেকে সংগ্রহ করবে নমুনা, খুঁড়ে দেখবে মঙ্গলের ‘মাটি’।

এই কাজ যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা বলাই বাহুল্য । তবে শুধু পার্সিভারেন্স রোভারের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করেই তাঁর কাজ শেষ হচ্ছে না । ২০২৭ সালে মঙ্গল থেকে নিয়ে আসা পাথুরে নমুনাগুলির বিশ্লেষণের কাজেও তিনি জড়িত থাকবেন। ভারতীয় সর্বপরি বিজ্ঞানপ্রেমী হিসাবে সঞ্জীব এবং বন্দনার জন্য গর্ব বোধ করতেই পারি আমরা !

Tagged in:

,