সম্প্রতি মঙ্গল গ্রহে নাসার পাঠানো Perseverance Mars Rover নিয়ে মানুষের জন্য অভূতপূর্ব উত্তেজনা দেখা গিয়েছিলো। আর আমাদের বাঙালিদের এই বিষয়ে গর্ব বোধের আরো একটা বড়ো কারণ সৌম্য দত্ত। আমাদের বর্ধমানের ছেলে বাঙালি গবেষক সৌম্য দত্তের বানানো প্যারাস্যুটে চেপেই মঙ্গলের মাটিতে নেমেছে Perseverance Mars Rover। আর সেই রুদ্ধশ্বাস ৭ মিনিটের ভিডিও-র দিকে সেসময় নজর রেখেছিলো পৃথিবীর । এবার নাসার Perseverance Mars Roverএর সঙ্গে জড়িয়ে গেলেন শার্লক হোমসও !! কিন্তু কি ভাবে ? সেই প্যারাস্যুটের দেশাইনের মধ্যেই যে লুকিয়ে ছিল গোপন ধাঁধাঁ, তা ক’জন ধরতে পেরেছিলেন সেদিন?

হ্যাঁ ঠিকই , পার্সিভারেন্সের ২১ মিটার ব্যাসের বিশাল প্যারাস্যুট-জুড়ে লুকিয়ে ছিল একটি এনকোডেড বার্তা বা সাইফার(Cipher )। রঙ এবং বাইনারি ডিজিটের মাধ্যমে তা এনকোড করা হয়েছিল প্যারাস্যুটেরনকশায় । তবে কয়েক কোটি মানুষ লাইভ ভিডিও দেখলেও মঙ্গলযানের সফল অবতরণের পরও তা নজরে পড়েনি কারোরই। খানিক বাদে নাসার ডিরেক্টর অ্যালেন চেন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ্যে আনেন সাইফারের ব্যাপারটি। খানিকটা হতাশার সুরই মিশে ছিল সেইটুইটে । ছবি প্রকাশ করেই সেই পাজল সমাধানের জন্য আহ্বান জানান তিনি।

তবে একবার প্রকাশ্যে আনার পর খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি তাঁকে। মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যেই চলে এসেছিল উত্তর। ‘Dare mighty things’। শুধু এই বাক্যই নয় সাথে ছিল আরো কিছু সংখ্যা । প্রথমে এলোমেলো মনে হলেও তা আসলে কিছুই নয়, ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত নাসার জেট প্রোপালশান সেন্টারের জিপিএস স্থানাঙ্ক। তবে মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যেই এতো মানুষ এই ধাঁধার উত্তর বের করে ফেলবে তা আশাই করেননি এই এই cipher যাঁর মস্তিস্কপ্রসূত সেই চিফ ইঞ্জিনিয়ার অ্যাডাম স্টেল্টজনারও।

তবে এখানেই শেষ নয় রহস্যের। জানা গেছে পার্সিভারেন্স রোভারের একটি বিশেষ ক্যামেরা লেন্সের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হবে মঙ্গলের মাটি। সেখানে প্রাণের বসবাসযোগ্য কোনো জায়গা কিংবা প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা তা Raman & Luminescence স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে দেখাই কাজ এই লেন্সের।আর এই instrument টিকে নাসা আদর করে একটা নামও দিয়েছে –শার্লক !! ঠিকই পড়েছেন আসলে SHERLOC হলো Scanning Habitable Environments with Raman & Luminescence for Organics & Chemicals এর সংক্ষেপ। আরো মজার বিষয় হল,,এই ‘তদন্তকারী’ ক্যামেরা লেন্সের মধ্যেই রয়েছে সূক্ষ্ম একটি ওয়াটারমার্কও। ‘২২১বি বেকার স্ট্রিট’। আলাদা করে নিশ্চই বলে দিতে হবে না এই ঠিকানাটিতে কে থাকেন । পরবর্তীকালে এই ক্যামেরার মাধ্যমে তোলা সব ছবিতেই থেকে যাবে শার্লক হোমসের ছাপ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য শুধু এইবারই প্রথম বার নয় ,এর আগেও কিউরিওসিটি রোভার পাঠানোর সময়ও এমনএকটি ‘মজা’ করেছিল নাসা। জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরি বা ‘জেপিএল’-এর মর্স কোডের বানান স্থাপন করেছিল কিউরিওসিটির চাকায়। লালগ্রহে যে পথ অতিক্রম করেছে কিউরিওসিটি, সেখানেই প্রতি বর্গফুটে সেই কোডের ছাপ রেখে গেছে রোভারটি। এবার পার্সিভারেন্সের ক্ষেত্রেও নাসা আবারো তাদের সেন্স অফ হিউমারের পরিচয় দিলো !

Tagged in:

,