এমনিতেই এই মূল্যবৃদ্ধির বাজারে টেলিকম সংস্থা গুলির প্ল্যানের দাম বাড়ানো নিয়ে গ্রাহকদের ভোগান্তির শেষ নেই। এর মধ্যে গ্রাহকদের চিন্তা বাড়িয়েদেশের অন্যতম প্রধান টেলিকম অপারেটর সংস্থা Vodafone Idea বা Vi পুনর্বার তাদের রিচার্জ ট্যারিফ বাড়ানোর ইঙ্গিত দিলো। সংস্থার সিইও (CEO) রবিন্দর টক্কর স্বয়ং এই মূল্যবৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছেন। অবশ্য ঝটিতি এই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে Vodafone Idea আরো কিছুটা অপেক্ষা করবে। তার কারণ গত নভেম্বর মাসেই (২০২১) সংস্থাটি দেশের অন্যান্য টেলিকম গোষ্ঠীদের সাথে মিলিতভাবে রিচার্জ ট্যারিফের মাশুল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে সম্প্রতি বহু উপভোক্তা Vi -এর পরিষেবা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। আগামীতে এই প্রবণতা আরো বাড়তে পারে। তাই পুনরায় রিচার্জ প্ল্যানের দাম বাড়ানোর ব্যাপারে সংস্থাটি আপাতত ‘ধীরে চলো নীতি’ অনুসরণেই আগ্রহী।
সংস্থার আয় সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে Vi সিইও রবিন্দর টক্কর বলেন, বর্তমানে তাদের ন্যূনতম প্ল্যান মূল্য ৯৯ টাকা যা 4G পরিষেবা ব্যবহারে আগ্রহীদের পক্ষে খুব একটা বেশি নয়। এক্ষেত্রে টক্করের বক্তব্যে পুনরায় ট্যারিফ মাশুল বাড়ানোর ইঙ্গিত স্পষ্ট যা Vi গ্রাহকদের জন্য মোটেও শ্রুতিমধুর নয়।
অবশ্য এরপর রাখঢাক না করেই Vi সিইও টক্কর তাদের আগামী পরিকল্পনার কথা স্পষ্ট করেন। তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে সত্বর তারা রিচার্জ ট্যারিফের দাম পুনরায় বাড়াতে চলেছেন। ২০২২ সালেই তারা এই ভাবনা কার্যকর করতে চলেছেন বলে তিনি জানান।
এদিকে পরিসংখ্যান অনুযায়ী নভেম্বরে (২০২১) রিচার্জ ট্যারিফের মূল্য বৃদ্ধির ফলে গ্রাহকেরা Vi -এর পরিষেবা ছাড়তে তৎপর হয়েছেন। এজন্য সংস্থার গ্রাহক ভিত্তি ২৬.৯৮ কোটি থেকে কমে ২৪.৭২ কোটিতে এসে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া একই কারণে সংস্থার গ্রাহক পিছু আয়ের পরিমাণে (ARPU) প্রায় ৫ শতাংশ ঘাটতি দেখা গিয়েছে। এক্ষেত্রে বাৎসরিক হিসেবে সংস্থার গ্রাহক প্রতি আয় ১২১ টাকা থেকে কমে ১১৫ টাকায় নেমে এসেছে।
এছাড়া পরিসংখ্যান থেকে Vi -এর সামগ্রিক লোকসানের পরিমাণও সামনে এসেছে। দেখা গেছে, টানা তিনটি প্রান্তিকে ক্ষতির ধাক্কা সামলে ২০২১ সালের শেষভাগে সংস্থার মোট লোকসান প্রায় ৭,২৩০.৯ কোটি টাকা! অথচ এর ঠিক আগের বছরে একই সময়পর্বে Vi -এর সামগ্রিক লোকসানের পরিমাণ ছিলো ৪,৫৩২.১ কোটি টাকা যা অনেকটাই কম।
শুধুমাত্র লোকসানের পরিমাণ বৃদ্ধিই নয়, রিচার্জ ট্যারিফের দাম বৃদ্ধির ফলে Vi -এর সামগ্রিক আয়েও ঘাটতি চোখে পড়েছে। ২০২১ সালের অন্তিম ভাগে সংস্থার পরিচালন বাবদ আয়ের পরিমাণ পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ১০.৮ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ১০,৮৯৪.১ কোটি টাকা থেকে ৯,৭১৭.৩ কোটি টাকায় ঠেকেছে। এছাড়া একই সময়ে সংস্থার সামগ্রিক ঋণের পরিমাণ ১,৯৭,৪৮০ কোটি টাকা।